এবার সোমালীয় জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজে ২৩ নাবিকদের মধ্যে রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব খান। আইয়ুব লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা; তার বাড়ি রায়পুর উপজেলার রাখালিয়া গ্রামে। প্রায় এক মাস আগে তার বাবা আজহার মিয়া মারা যান। সেই শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারটি। এর মধ্যেই ঘরের ছোট ছেলে সাগরে জলদস্যুদের কবলে।
এই শোকে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন আইয়ুবের মা হোমায়রা বেগম। কিছুক্ষণ পর পর ছেলের জন্য আর্তনাদ করছেন। গতকাল বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাখালিয়ায় গ্রামের বাড়িতে গেলে হোমায়রা বেগম বলেন, সোমবার বিকেলে আইয়ুবের সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছে। পরদিন অন্য ছেলেদের সঙ্গেও কথা বলেছে। তবে কেউ তাকে কিছু জানায়নি।
গত মঙ্গলবার রাতে তিনি নাতনীর কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারেন। পরে মেজ ছেলেকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানতে চান। তখন তাকে আইয়ুবের জন্য চিন্তা না করতে বলা হয়। ভারত মহাসাগরে ছোট ছেলে জলদস্যুদের কবলে পড়ছে জানার পর থেকে সারারাত ঘুমাতে পারেননি হোমায়রা। ছেলে কোথায়, কিভাবে, কেমন আছে? এসব বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এদিকে হোমায়রা বেগম বলেন, ‘আমি আমার বাবা রে চাই। দুই দিন ধরে জান-প্রাণ দিয়ে কোরআন শরীফ পড়ছি। আইয়ুবও সোমবার কোরআন শরীফ পড়া শুরু করেছিল। আল্লাহ, আপনি রহমত নাজিল করে দেন। আমার স্বামী মারা যাওয়ার ২০-২৫ দিন আগে আইয়ুব বাড়িতে এসেছিল। একদিন থেকেই চলে গেছে।’
আইয়ুবের বন্ধু আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘আইয়ুব আমার খুব ভালো বন্ধু। আমরা তাকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে চাই। সে যেন দ্রুত আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসে।’ আইয়ুবের ভাতিজা তারেক হোসেন বলেন, ‘আইয়ুব চাচা ভালো মানুষ। আমাদের সঙ্গে খুব ভালো আচরণ করতেন। আমাদের সঙ্গে খেলাধুলা করতেন। আমরা তাকে দ্রুত ফিরে পেতে চাই।’
এদিকে আইয়ুব রাখালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রামগঞ্জের ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া একাডেমি থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। প্রায় এক বছর ধরে ইন্টার্ন করছেন তিনি।